Comic Story
Panel 1
সেদিন রাতে আমি মরেই যাচ্ছিলাম—কিন্তু মৃত্যুর আগে যা দেখেছিলাম, সেটা পৃথিবীর কোনো মানুষ বিশ্বাস করবে না। নদীর পাশের ওই শর্টকাট রাস্তাটা আমি বহুবার হেঁটেছি, কিন্তু সেদিন ছিল আলাদা।
Panel 2
কারণ, সেদিন রাস্তায় আমি একা ছিলাম না। কেউ বা কিছু আমার পেছনে নিঃশব্দে হাঁটছিলো...আমার নাম রিদয়। বাড়ি বরগুনার ছোট একটা গ্রামে—নাম চরকাঠি।
Panel 3
গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বিশাল ধলেশ্বরী নদী। নদীটা যেমন শান্ত, তেমনি ভয়ঙ্কর কাহিনি লুকিয়ে রাখে বুকের ভেতর। ছোটবেলায় দাদুর মুখে শুনতাম—“সন্ধ্যার পর নদীর ধার ধারে যাইস না, হইলেত মুখোমুখি হইয়া যাইবি সাদা চাদরপরা মাইয়ার লগে!”
Panel 4
আমি তখন হাসতাম, ভাবতাম দাদু বাড়িয়ে বলত। কিন্তু একদিন… নিজের চোখে এমন কিছু দেখলাম, যা আজও ভুলতে পারিনি।
Panel 5
সেবার আমার এক মামাতো ভাইয়ের বিয়েতে গেছিলাম পাশের গ্রামে, নাম খয়েরতলা। বিয়েতে অনেক মজা হলো। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হতে চলেছে, তখন ফিরছি নানার পুরনো বন্ধু বাদশা চাচার মোটরচালিত নৌকায়।
Panel 6
হুট করে তিনি বললেন, “বাবা, আমি তো বাজারে নামতে হইবো। তোকে ঘাটে নামায় দেই, তুই হাঁটাই বাড়ি যা পারবি তো?” আমি সাহস দেখিয়ে বললাম, “চাচা, আমি কি আর ছোট? পারব না মানে?”
Panel 7
চাচা একটু চিন্তা করে আমাকে নামিয়ে দিলেন চরবন্দরের ঘাটে। জায়গাটা বেশ নির্জন, কিন্তু আমি পাত্তা দিলাম না। বাড়ি যেতে দুটো রাস্তা—একটা লম্বা কাঁচা রাস্তা, আরেকটা শর্টকাট, বাঁশঝাড় আর কিছু জংলা জায়গা পেরিয়ে।
Panel 8
আমি ভাবলাম, আজ বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ, দেরি করা যাবে না। শর্টকাট ধরি। চুপচাপ হাঁটছি। চারদিকে অন্ধকার নামছে, কাঁঠাল গাছের পাতায় বাতাসে শোঁ শোঁ শব্দ।
Panel 9
হঠাৎ বাঁ পাশের ঝোপ থেকে “ধপ” করে একটা আওয়াজ! আমি থেমে গেলাম। ভেতরটা কেমন করে উঠলো। কানে ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ, কিন্তু ওই “ধপ” টার পর কোন শব্দ নেই।
Panel 10
আমি খুব কৌতূহলী ছিলাম সবসময়, সাহসও ছিল ভালো। আস্তে পা ফেলে ঝোপের দিকে এগোলাম। একটা গাছের নিচে উঁকি দিতেই যা দেখলাম, তাতে রক্ত ঠাণ্ডা হয়ে গেল।
Panel 11
একটা সাদা কাপড় পরা মেয়ে, ঝুঁকে আছে একটা মরা ছাগলের ওপর। তার মুখ রক্তে ভেজা, আর সে যেন হাড় চিবুচ্ছে—“কড়মড়, গচ গচ” করে শব্দ হচ্ছিল।
Panel 12
আমার মুখ ফেটে বেরিয়ে এলো, “এই! কে রে?” সে ধীরে ধীরে মুখ তুলে তাকালো। চোখ লালচে, গালে রক্ত গড়াচ্ছে, দাঁতগুলো তীব্র আর ধারালো!
Panel 13
হঠাৎ এমন হাসি দিলো—যেটা দেখে বুকের ধুকপুকানি থেমে যেতে চায়। আমি পেছাতে চাইছিলাম, কিন্তু পা যেন বরফ হয়ে গেছে। আমি শুধু চিৎকার করে বললাম, “আল্লাহু আকবার!”
Panel 14
তারপর কী হলো মনে নেই। চোখ খুললাম, দেখি আমি বাড়ির উঠানে শুয়ে। পাশে আব্বা, দাদি, গ্রামের হুজুর, সবাই বসে। কাঁধে পানি ঢালছে।
Panel 15
পরে শুনি, গ্রামের করিম চাচা রাত ১০টার দিকে রাস্তা দিয়ে ফিরছিলেন, তখন ঝোপের পাশে আমাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন মিলে আমাকে বাসায় নিয়ে আসে। আরও ভয়ঙ্কর খবর হলো—সেই জায়গা থেকে কয়েক গজ দূরে একটা আধ খাওয়া ছাগলের লাশ পাওয়া যায়।
Panel 16
হুজুর বললেন, “ওই রাস্তায় বহু আগেই এক মহিলা মারা গেছিলো, নদীতে ডুবে। কেউ বলে আত্ম/হ:ত্যা, কেউ বলে হ:'ত্যা। তারপর থেকে ওই রাস্তায় সাদা কাপড়ের ছায়া দেখা যায়, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর।”
Panel 17
তারপর থেকে আমি আর কখনো শর্টকাট ধরি না। তবে আমার এখনো ঘোর কাটেনি—আজও আমি মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে সেই র'ক্তমাখা মুখ, হাড় চিবানোর শব্দ, সেই ঠাণ্ডা ছায়া—আজও মাঝেমধ্যে ঘুমের ভেতর দেখি!