Comic Story
Panel 1
চারুলতা মিত্রের দিনটা শুরু হয়েছিল একেবারে সাধারণভাবে—মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে, ল্যাপটপ খুলে ক্লায়েন্টের ইমেল পড়া। কফির মগ হাতে নিয়ে সে বসেছিল, ঠিক তখনি ফোন।
Panel 2
টপু বলল, “চারু, তোকে একটা আজব ব্যাপার বলি? এক ডাইনের কাছে গিয়েছিলাম কাল। সে বলেছে, ‘আগামী সাতদিনের মধ্যে তিনজন মারা যাবে। তাদের নাম শুরু হবে ‘স’ দিয়ে।’”
Panel 3
চারু হেসেই ফেলেছিল। “সিরিয়াল কিলিংয়ের হুমকি এখন জ্যোতিষীরাও দিচ্ছে নাকি!” কিন্তু ঠিক দুদিন পর খবরের কাগজে শিরোনাম: “সায়ন্তন সেনের রহস্যময় মৃত্যু: হার্ট অ্যাটাক, না কি খুন?”
Panel 4
চারু একটু চমকে উঠল। কাকতালীয়? হতে পারে। কিন্তু ঠিক পরের দিন— “সঞ্জনা সরকার, সাংবাদিক, নিহত নিজের অ্যাপার্টমেন্টে”।
Panel 5
চারু আর থেমে থাকতে পারলো না। টপুকে ডেকে বলল, “তোর ডাইনিটা কোথায় থাকে বল তো?”
Panel 6
টপু আর চারু সেই লোকালয়ের ভেতরে প্রবেশ করল—এক পুরোনো দোতলা কুয়াশাভেজা বাড়ি। দরজার গায়ে শিকল বাঁধা, জানালায় লাল কাপড়ের পর্দা।
Panel 7
চারু দরজায় কড়া নাড়তেই এক কণ্ঠ এল—“তোমরা এসেছো… আমি জানতাম।” ভেতরে বসে ছিল এক বৃদ্ধা নারী, যার চোখ জ্বলজ্বল করছিল candle light-এ।
Panel 8
“তিনটি আত্মা… তিনটি পাপ… তিনটি মৃত্যু… সবই ফিরে আসছে সেই অতীত থেকে। তিন দশক আগের সেই ঘটনার খেসারত…” চারু বলল, “তিন দশক আগে কী ঘটেছিল?”
Panel 9
বৃদ্ধা চোখ বন্ধ করল, “তিন বন্ধুর এক প্রতিজ্ঞা, একটি দুর্ঘটনা, আর একটি লুকোনো লাশ।”
Panel 10
এখনো বাকি একজন—‘স’ দিয়ে যার নাম শুরু হয়। চারু পুলিশের বন্ধু ইনস্পেক্টর রাকিবের সাহায্যে বের করে সেই তিনজন পুরনো বন্ধুর নাম—সৌরভ সিংহ।
Panel 11
চারু বুঝতে পারলো, খুনি একে একে সবাইকে খুঁজে বের করছে। তবে কী খুনি সেই 'ডাইনি'? নাকি কেউ অন্য? তিনজনের অতীতে এমন কী ঘটেছিল, যার খেসারত আজ দিতে হচ্ছে?
Panel 12
চারু ও টপু রওনা দিল কলকাতার উদ্দেশে। সৌরভ সিংহ এখন একজন শিল্পপতি, শহরের এক অভিজাত ফ্ল্যাটে থাকেন।
Panel 13
ফ্ল্যাটে ঢুকতেই চারু লক্ষ্য করল—সৌরভ ভীষণ আতঙ্কিত, চোখের নিচে কালি, হাতে কাঁপুনি। চারু বলল, “মিস্টার সিংহ, আপনি জানেন আপনার বন্ধুরা খুন হয়েছেন।”
Panel 14
সৌরভ থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বলল, “আমি জানতাম… এটা হবেই। আমরা যা করেছি… তা থেকে রেহাই নেই…” চারু চোখ গেড়ে বলল, “আপনারা কী করেছিলেন?”
Panel 15
সৌরভ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল। “সেই ১৯৯৫ সালের দুর্গাপুজোর সময়। আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম মেদিনীপুরে, এক পরিত্যক্ত জমিদারবাড়িতে। ওখানে আমরা এক মেয়েকে পাই—নাম ছিল কুন্তলা…”
Panel 16
“ওর মৃত্যু হয়—আমরা বলি দুর্ঘটনা, কিন্তু আসলে…” তার কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এলো। চারু ধীরে বলল, “আপনারা লাশটা কোথায় গেছেন?”
Panel 17
ফিরে এসে চারু ও টপু সেই জমিদারবাড়ির খোঁজ শুরু করল। পুরনো দলিলপত্র ঘেঁটে অবশেষে পায় সেই ভগ্নপ্রায় বাড়ির অবস্থান।
Panel 18
ভেতরে ঢুকতেই স্যাঁতসেঁতে গন্ধ, ছাদ থেকে চুন খসে পড়ছে। হঠাৎ টপুর পা কিছুর ওপর পড়ে—মাটির নিচে কিছুর অস্তিত্ব! খুঁড়ে দেখা গেল এক পুরনো ট্রাঙ্ক।
Panel 19
ভেতরে ছিল কুন্তলার ডায়েরি। প্রথম পাতায় লেখা— “আমি জানি, আমি মারা যাব। কিন্তু আমি ফিরব। যাদের বিশ্বাস ছিল না, তারা সত্যের মুখোমুখি হবে।”
Panel 20
চারু বলল, “এটা শুধু প্রতিশোধের গল্প নয়। এটা কোনো মানসিক যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ… অথবা, হয়তো কেউ এই গল্পকে ব্যবহার করে খুন করছে—একটা নিখুঁত নাটক তৈরি করে।”
Panel 21
ঢাকায় ফিরে এসে চারু বুঝতে পারল, সময় কম। সৌরভ এখনও জীবিত, কিন্তু আতঙ্কে ভুগছে।
Panel 22
এক রাতে, চারুর ফোনে একটা অচেনা নম্বর থেকে ভিডিও আসে। খুলে দেখে, কেউ একজন সৌরভের ফ্ল্যাটে ঢুকছে। মুখ ঢাকা, হাতে ছুরি।
Panel 23
সৌরভ সিংহ—নিহত। চারু স্তব্ধ। তিনজনই খুন—ডাইনির ভবিষ্যদ্বাণী শতভাগ সত্যি হয়েছে।
Panel 24
চারু কুন্তলার পরিবারের খোঁজ শুরু করল। জানতে পারল, কুন্তলার এক ছোট ভাই ছিল—নাম কুন্তেশ। দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ।
Panel 25
ঠিক তখনই, চারুর কাছে আসে একটি খাম। ভেতরে একটি নোট— “তুমি যা দেখছো, তার বাইরেও সত্যি আছে। একবার ফিরে দেখো তোমার আশেপাশে, কে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছে এই কেসে?”
Panel 26
সে চোখ বন্ধ করে ভেবেছিল—প্রথমে কে তাকে এই কেসে জড়াল? টপু। তার নিজের কাজিন।
Panel 27
রাতে চারু একা অফিসে বসে ছিল। হঠাৎ পেছন থেকে এক ছায়া আসে, ধীরে ধীরে কাছে আসে— “তুমি যা জানো, তাও খুব সামান্য…”
Panel 28
চারু ধীরে ঘুরে দাঁড়ায়, “তুমি তাহলে—” টপু। তার চোখে অদ্ভুত এক আলোকচ্ছটা।
Panel 29
“তুই জানিস না, কুন্তলার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল। আমরা লুকিয়ে দেখা করতাম। প্রতিশোধের আগুন কখনো নিভে না, চারু।” চারু বলল, “তুই আমাকে কেন বললি ডাইনের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা?”
Panel 30
রেকর্ডারটা টেবিলের নিচে অন করে দিয়েছিল আগেই। রাকিব ও পুলিশ ঘিরে ফেলে চারপাশ। টপু বুঝে যায়, তার খেলা শেষ।
Panel 31
চারু কাঁপা গলায় বলল, “তুই যদি আমাকে আগেই সব বলতি…” টপু হাসল, “তুই তাহলে থামিয়ে দিতি।”
Panel 32
চারু জানত, সব গল্পের শেষ সবসময় ন্যায়ের জয় নয়। কখনো কখনো, প্রতিশোধও হয়ে ওঠে অন্য রকম ন্যায়। তার ডেস্কে এখনো পড়ে আছে কুন্তলার ডায়েরি।
Panel 33
ডায়েরীর শেষ পাতায় লেখা— “সত্যের পথ কখনো সরল হয় না। তবু সেই পথেই হেঁটে যেতে হয়।”